ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুলি নদী তীরে অবস্থিত এই ব্যান্ডেল চার্চ। বহু সাধারণ মানুষরা এই চার্চে বেড়াতে আসেন। বর্তমানে গ্রানাইট ও মার্বেল পাথর বসিয়ে গির্জা সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও মেরামতির কাজ করা হয়েছে। এই ব্যান্ডেল চার্চ বা গির্জার বাইরে ও ভেতরে প্রার্থনা ও উপাসনার জন্য কতগুলি স্থান বাড়ানো ও সুন্দর করা হয়েছে
1988 খ্রিস্টাব্দে ২৫ শে নভেম্বর ব্যান্ডেল গির্জাকে মহামান্য পোপ দ্বিতীয় জন পল বাসেলিকা সম্মানে ভূষিত করে। 1599 সালে তৈরি হয়েছিল এই ব্যান্ডেল চার্জটি এর পোশাকি নাম হলো The Basilica of the Holy Rosary
Bandel Church open & closing time | ব্যান্ডেল চার্চ বন্ধ এবং খোলার সময়
- ব্যান্ডেল চার্চ প্রতিদিন সকাল 8 am থেকে বিকাল 4.50 pm পর্যন্ত খোলা থাকে।
- এই ব্যান্ডেল চার্চে কোন প্রবেশ মূল্য নেই অর্থাৎ আপনারা বিনামূল্যে এই ব্যান্ডেল চার্চ পরিদর্শন করতে পারবেন।
ব্যান্ডেল চার্চে যাওয়ার পদ্ধতি
হাওড়া থেকে ব্যান্ডেল বা কাটোয়া লোকাল ধরে ব্যান্ডেল স্টেশনে পৌঁছতে হবে। ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে টোটো করে পৌঁছে যেতে পারবেন ব্যান্ডেল চার্চে।
Bandel Church history ( ইতিহাস ) in Bengali
পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম চার্চ এই ব্যান্ডেল চার্চ। এই ব্যান্ডেল চার্জে পোশাকি নাম The Basilica of the Holy Rosary bandel। এই চার্জ তৈরি হওয়া থেকে আজ পর্যন্ত নানা ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে।
ভাস্কো দা গামা ভারতবর্ষের মাটিতে পা রাখার দুশো বছর পরে পর্তুগিজরা বাংলায় প্রবেশ করতে শুরু করে এবং পরে 1599 খ্রিস্টাব্দে হুগলি নদীর তীরে তারা ব্যান্ডেল চার্চ নামে খ্যাত। কিছু বছর পরে ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মুঘল সম্রাট শাহজাহান পর্তুগিজদের উপর আক্রমণ শুরু করেন এর সাথে সাথেই পর্তুগিজদের বহু গির্জা এবং কেল্লা ধ্বংস করে দেয় এছাড়াও স্থানীয় খ্রিস্টানদের হত্যা করা হয়। ব্যান্ডেল চার্চ এর ফাদার জুনান ডিক্রুজকে বন্দী করে আগ্রায় নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে তাকে একটি মত্ত হাতের সামনে ফেলে দেওয়া হয়, কিন্তু হাতিটি তাকে পায়ে পিছে ফেলার বদলে তাকে সুর দিয়ে পিঠে বসিয়ে নেয়। এই অবিশ্বাস্য ঘটনা সম্রাট শাহজাহান সহ সকলকে চমকে দেয়।
এই অবিশ্বাস্য ঘটনা এখানেই শেষ হয় না এই যুদ্ধকালীন সময় দেখা যায় মাতা মেরির মূর্তি জলে ভেসে যাচ্ছিল এক স্থানীয় খ্রিস্টান যুবক জলে ঝাঁপ দিয়ে মূর্তি উদ্ধার করার চেষ্টা করে কিন্তু সেই যুবক সেই মূর্তিটি উদ্ধার করতে পারেননি। নতুন করে গির্জা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সময় সেই মূর্তিটি হঠাৎ করে হুগলি নদীর পাড়ে ভেসে আসে। চার্চের পাশ দিয়ে হুগলি নদী প্রবাহিত হওয়ার জন্য নদীর পাড়ে ভেসে আসা মূর্তিটির নাম হয় Our Lady of Happy Voice।
এই ব্যান্ডেল চার্চের আরো অনেক ইতিহাস আছে এই চার্চ নাম ব্যান্ডেল চার্চ রাখার কারণ – একবার একটি জাহাজ প্রবল ঝড়ের মুখে পড়েছিল জাহাজটি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজের মধ্যে থাকা অনেক মানুষই মারা যান। কিন্তু জাহাজের ক্যাপ্টেন ঘটনাচক্রে বেঁচে গিয়েছিলেন। তিনি তখন বঙ্গোপসাগরের থেকে ঝড় কাটিয়ে তিনি যখন বঙ্গোপসাগরের কিনারায়ের দিকে জাহাজটিকে আনছিলেন তখন তিনি মনে মনে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি প্রথম যে গির্জাটি দেখবেন সেখানে জাহাজের প্রধান মাস্তুলটি দান করবেন। এইভাবে আস্তে আস্তে আজকের যেটি ব্যান্ডেল চার্চ সেই চার্চটিকে কে প্রথম দেখেন এবং তার প্রতিজ্ঞা মতই তিনি জাহাজের মাস্তুলটি এই গির্জা কে দান করেন। সেই মাস্তুলটি যদিও অনেকখানি ভাঙাচোরা হয়ে গিয়েছে। তবে বর্তমানে এই মাস্তুলটি গির্জার প্রাঙ্গণে রয়েছে।মাস্তুলকে পর্তুগিজ ভাষায় ব্যান্ডেল বলা হত। আর সেখান থেকেই গির্জার নামকরণ করা হয় ব্যান্ডেল গির্জা। ওই পর্তুগিজ নাবিক এই পুরাতন গির্জার নাম দেন ব্যান্ডেল চার্চ।
মাতা মারিয়ার প্রত্যাবর্তন নিয়ে একটি ইতিহাস রয়েছে। এক গভীর রাতে ফাদার জোয়ান দেখলেন নদীর জলে এক অদ্ভুত যদি আর ওখান থেকে ভেসে এলেন বন্ধুর তিয়াগর কণ্ঠের ঘোষণা মাতা মরিয়া ফিরে আসছেন। তিনি মৃত্যুর কবর থেকে খ্রিস্টানদের রক্ষা করছেন। ফাদার জোয়ান ভাবলেন এটি একটি স্বপ্ন। কিন্তু সকাল হতেই একদল জেলে গির্জার প্রবেশ দ্বারে মূর্তিটির এনে ফাদারকে বললেন গুরু মা ফিরে এসেছেন। যে মূর্তিতে একদিন জলে ভেসে গিয়েছিল সেই মূর্তিটি একদিন জেলেদের সামনে ভেসে উঠেছিল আর সেটি ফাদারের কাছে নিয়ে গিয়ে এসেছেন তারা। এই ভাবেই মাতা মারিয়া পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ব্যান্ডেল চার্চে।
Bandel Church Adderss
W99W+Q6C, Sahaganj, Chinsurah, Bandel, West Bengal 712104
Bandel Church Location
পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য দর্শনীয় স্থানগুলি
বান্ডেল চার্চ । আদ্যাপীঠ কালি মন্দির । বিড়লা মন্দির । হাওড়া ব্রিজ । দক্ষিনেশ্বর মন্দির । ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল | বিশ্ব বাংলা গেট । সোলার ডোম