Dakshineswar Kali Temple open & closing time and history in Bengali

দক্ষিনেশ্বর কালী মন্দির বন্দ এবং খোলার সময় ; Dakshineswar Kali Temple arti time ; দক্ষিনেশ্বর কালী মন্দিরের ইতিহাস  

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান। মন্দিরটি কলকাতার অদূরে হুগলি নদীর তীরে অবস্থিত। 1855 সালে 31মে স্নানযাত্রার দিন হুগলি নদীর পূর্ব পাড়ে অবস্থিত দক্ষিণেশ্বর নামক স্থানে এই মন্দিরের মূর্তি প্রতিষ্ঠান করেন রানী রাসমণি। এই মন্দিরে দেবী কালীকে ভবতারিণী নামে পূজা করা হয়।

দক্ষিণেশ্বর কালি মন্দির

দক্ষিণেশ্বর মন্দির কলকাতা মেট্রোপলিটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে এবং উত্তর 24 পরগনার জেলার অধীনে অবস্থিত। এই স্থানটি ঐতিহাসিক কালী দেবীর মন্দিরের জন্য বিখ্যাত। স্থানীয়ভাবে মা ভবতারিণী মন্দির নামে পরিচিত।

Dakshineswar Kali Mandir opening and closing time | দক্ষিণেশ্বর মন্দির বন্দ এবং খোলার সময়

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির প্রতিদিন ভোর 4টে সময় মঙ্গল আরতি ও পূজা হওয়ার সাধারণ দর্শকবৃন্দ প্রবেশ করতে পারবেন।

সোমবার, বুধবার, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাত্রি 10:30 pm মন্দিরের দরজা দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ হয়ে যায়

মঙ্গলবার ও রবিবার রাত্রি 11:00 pm

শুধুমাত্র শনিবার রাত্রি 11:30 pm সময় পর্যন্ত মন্দিরের দরজা খোলা থাকে।

সন্ধ্যা আরতির সময় 6:30 – 7:30 pm 

ভোট বিতরণ শুরু হয় দুপুর 2 pm থেকে। তবে বিশেষ কারণ বসত  পুজোর দিন এই সূচি পরিবর্তন হয়ে থাকে।

Dakshineswar Kali Temple history | দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের ইতিহাস

ভারতবর্ষের যে কটি কালি সাধনা স্থল আছে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির তাদের মধ্যে অন্যতম প্রসিদ্ধ। দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির প্রতিষ্ঠার পেছনে একটি ইতিহাস আছে।

1847 সালে কলকাতার যান বাজারের রানী রাসমণি দেবী অন্নপূর্ণার পূজা দেবেন বলে কাশিতে তীর্থযাত্রার আয়োজন করেন। 24 টি নৌকা দাস-দাসী আত্মীয়-স্বজন সবকিছুই প্রস্তুত কিন্তু যাত্রার ঠিক আগের দিন রাত্রে দেবীকালীর স্বপ্নাদেশ পান যে তার কাশি যাওয়ার প্রয়োজন নেই। গঙ্গার তীরে একটি মন্দিরে কালী মূর্তি স্থাপন করে প্রতিষ্ঠা করলেই দেবী সেই মূর্তিতে আবির্ভূত হয়ে পূজা গ্রহণ করবেন। অবশেষে দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দিরে জন্য 20 একর জমি জন হেসটি নামে এক ইংরেজের কাছ থেকে কিনে নেন রানী রাসমণি। সবাই সাহেবান বাগিচা বলে তুলনা করতেন এবং এর একটি অংশ ছিল মুসলমানদের কবরখানা। জমিটি দেখতে কচ্ছপের পিঠের মত তাই তন্ত্রমতে স্থানটি শক্তি উপাসনার জন্য বিশেষ উপযুক্ত বলে বিবেচিত হয়।

1882 সালে এই বিরাট মন্দিরের নির্মাণ কাজ শুরু হয় এবং শেষ হয় 1855 সালে। এই মন্দির তৈরিতে খরচ হয়েছিল 9 লক্ষ 25 হাজার টাকা যার মধ্যে শুধু উদ্বোধনের দিনেই খরচ হয়েছিল 2 লক্ষ টাকা। 100 ফুটের বেশি উঁচু এই নবরত্ন মন্দিরের গর্ব গৃহে সহস্র পাপড়ি রৌপগৃহে শিবের বুকের উপর দাঁড়িয়ে দেবী কালী।একটি পাথর দিয়ে তৈরি হয়েছে দেবি কালী মূর্তি। তবে মন্দির উদ্বোধন নিয়ে বেশ কিছু জটিল সমস্যা হয়েছিল। শোনা যায় দক্ষিণেশ্বর মন্দির উদ্বোধনের চিঠি পেয়ে রামকৃষ্ণের দাদা রানীর প্রতিনিধিদের বলেন রানী কৈবর্ত জাতি তার নিমন্ত্রণের দান গ্রহণ করলে তাকে এক ঘরে হতে হবে। রানীর বিশ্বস্ত এবং সুদক্ষ কর্মীরা বোঝান যে রাণী কৈবর্ত নন তিনি মহেশ্বর সম্প্রদায়। শেষ পর্যন্ত রামকুমার রাজি হন এবং তার ভাইপোকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা দিবসের একদিন আগে দক্ষিণেশ্বরে উপস্থিত হন।

সারা দেশ থেকে এক লক্ষের ও বেশি ব্রাহ্মণ নিমন্ত্রিত হয়েছিল। দাদা দক্ষিণেশ্বরে প্রসাদ গ্রহণ করলেও গদাধর বাজার থেকে এক পয়সার মুড়ি-মুরকি খেয়ে জামা পুকুরে ফিরে আসেন। পরে দাদার নির্দেশে নিজের হাতে রান্না করে খেতেন। শ্রীরামকৃষ্ণ দুপুরে পঞ্চ বটিতে পাক করলেও রাত্রে প্রসাদী লুচি খেতেন এবং জগদম্মকে বলতেন মা আমাকে কৈবর্ত এর অন্য খাওয়ালি সেই সময় গরিব কাঙ্গাল রাও খাবারের জন্য আসতো না। খাবারের লোক না আসায় দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের খাবার গরু খেত অথবা গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হতো।

চাকরিতে ঠাকুরের মন কোন দিনই ছিল না কিন্তু বাণীর জামাই মথুর বাবু এক প্রকার জোর করে তাকে বিষ্ণু ঘরের পূজার দায়িত্ব দিলেন। এবং ভাগ্নে হৃদয়কে দুই ভাইয়ের সাহায্য হিসেবে নিযুক্ত করেন। কিছুকাল বাদে ঠাকুরের পূজা দেখে মথুর বাবু শাশুড়ি রানী রাসমণিকে বলেন এক অদ্ভুত পূজারী পাওয়া গিয়েছে দেবী বোধ হয় শীঘ্রই জাগ্রত হয়ে উঠবেন।

কথা মৃত রচয়িতা মেহেন্দ্রনাথ গুপ্ত তার ফুট নোটে বলেছেন 1858 সালে রানী রাসমনির বরাদ্ধে তালিকা অনুযায়ী ঠাকুর ওরফে রামকৃষ্ণ মাসিক মাইনে পাচ্ছেন পাঁচ টাকা। তার ভাগ্নে পরিচারিকা হৃদয় মুখার্জি বেতন সাড়ে তিন টাকা এর বাড়তি দায়িত্ব ছিল ফুল তোলার এছাড়া বরাদ্দ তিন জোড়া কাপড় যার মূল্য সাড়ে চার টাকা। সেই সঙ্গে প্রতিদিনের খোরাকি হিসেবে সিদ্ধ চাল ডাল তামাক ও কাঠ।

দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ি স্বামী বিবেকানন্দের প্রার্থনা একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা প্রার্থনা করতে পাঠিয়েছিলেন। কিন্তু আর্থিক সমস্যা দূর করার উদ্দেশ্যে তিনবার কালির আদেশ প্রার্থনা করতে গিয়ে তিনবারই নরেন্দ্রনাথ উচ্চারণ করেছিলেন মা “জ্ঞান ভক্তি” ছাড়া আর কিছুই আমি চাই না। এই নরেন্দ্রনাথ ই হলো পরবর্তীকালে স্বামী বিবেকানন্দ। বিবেকানন্দের জীবনী কালে বীর কিশোরের মতে এই ঘটনার বিবেকানন্দের উক্তি ও জ্ঞানে নতুন মাত্রা যোগ করে। এর আগে পর্যন্ত তিনি ছিলেন মূর্তি পূজার বিরোধী।

dakshineswar temple aarti timings

দক্ষিণেশ্বর কালী মন্দির প্রতিদিন ভোর 4টে সময় মঙ্গল আরতি,
সন্ধ্যা আরতির সময় 6:30 – 7:30 pm

Leave a Reply

Your email address will not be published.